1. arafatrony080@gmail.com : Arafat Rony : Arafat Rony
  2. didargfx@gmail.com : Didar Ahmed : Didar Ahmed
  3. sunajur1971@gmail.com : Foysal Chowdhury : Foysal Chowdhury
  4. sojibroyhriday@gmail.com : Hridoy Roy : Hridoy Roy
  5. hridoynews3355@gmail.com : Hridoypress : Hridoy Ahmed
  6. jashimshek932@gmail.com : Md Jashim Uddin : Md Jashim Uddin
  7. talukderkajal@gmail.com : Kajal Talukder : Kajal Talukder
  8. mahabubalama1993@gmail.com : Mahabub Alam : Mahabub Alam
  9. news.sk.24bd@gmail.com : Masud :
  10. netrakonalive@gmail.com : NETRAKONA LIVE : NETRAKONA LIVE
  11. Roshidshahinur@gmail.com : Md Roshid : Md Roshid
  12. mdkayeasahmed@gmail.com : MD KAYEAS AHMED : MD KAYEAS AHMED
সাংবাদিকদের উপর হামলা: বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কি নিরাপদ? · Netrakona Live
ঢাকা ০৮:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিকদের উপর হামলা: বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কি নিরাপদ?

নেত্রকোণা লাইভ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশেষ প্রতিবেদন 

বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এক সময় ছিল মানুষের আস্থা ও মুক্ত চিন্তার প্রতীক। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যে ধারাবাহিকভাবে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে, তা শুধু পেশাগত ঝুঁকি নয়—এটি দেশের গণতন্ত্র, মুক্ত মত প্রকাশ ও জনগণের জানার অধিকারের উপর সরাসরি আঘাত। ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, আমরা হয়তো এমন এক সময়ের দিকে এগোচ্ছি যেখানে সত্য প্রকাশই হবে সবচেয়ে বড় অপরাধ।

সাম্প্রতিক কয়েকটি নৃশংস ঘটনা

৭ আগস্ট, গাজীপুরের চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ‘দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ’-এর সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন স্থানীয় এক মারধরের ঘটনা ভিডিও করায় দুর্বৃত্তদের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন। তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনা শুধু একটি হত্যা নয়—এটি একটি ভয়ঙ্কর বার্তা: সত্য তুলে ধরা মানেই প্রাণ হারানোর ঝুঁকি।
একই এলাকায় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে প্রকাশ্য হামলায় আহত করা।

একই সপ্তাহে, ‘আলরমনি’ সাপ্তাহিকের সম্পাদক হেলাল হোসেন কবির ও তার বৃদ্ধা মা বাড়িতে থাকা অবস্থায় লাঠি ও লোহার রড দিয়ে হামলার শিকার হন। বয়স্ক মায়ের মাথায় আঘাত করা হয়—যা শুধু আইনশৃঙ্খলার অবনতি নয়, মানবতার উপরও চরম আঘাত।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় ‘দৈনিক আজকের সূত্রপাত’-এর সাংবাদিক ফিরোজ আহমেদকে পূর্বের বিবাদের জেরে রড, হাতুড়ি ও ইট দিয়ে আক্রমণ করা হয়। মাথা ও পায়ে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত তিনি এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।

এই কয়েকটি ঘটনা একই মাসে সংঘটিত—যা প্রমাণ করে, এটি বিচ্ছিন্ন কোনো সমস্যা নয়, বরং একটি ধারাবাহিক প্রবণতা।

গণমাধ্যমে প্রায়ই সারাদেশে এ ধরনের হামলার ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। সারাদেশের সাংবাদিক সমাজ ফুঁসে উঠেছে। সাংবাদিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে, হতাশায় ভুগছে!

এই প্রবণতা কোথায় নিয়ে যেতে পারে?

১. সাংবাদিকদের মধ্যে ভয় ও আত্মনিয়ন্ত্রণ
সাংবাদিকরা সত্য প্রকাশের আগে একশোবার ভাববে—ফলে জনগণ সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হবে।

২. গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতার অবনতি
যখন চাপের মুখে সংবাদ পরিবেশন হয়, তখন গণমাধ্যম ধীরে ধীরে ক্ষমতাসীন বা প্রভাবশালী গোষ্ঠীর হাতিয়ার হয়ে পড়ে।

৩. গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ক্ষয়
গণতন্ত্রে ক্ষমতার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্বাধীন গণমাধ্যম অপরিহার্য। সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ হয়ে গেলে দুর্নীতি, অপশাসন ও অবিচার বাড়বে বৈ কমবে না।

৪. আন্তর্জাতিক সুনামের অবনতি
সাংবাদিকদের উপর বারবার হামলা হলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূচকে আরও নিচে নেমে যাবে—যা বিদেশি বিনিয়োগ, কূটনৈতিক সম্পর্ক ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

করণীয় কী?

দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তি: প্রতিটি হামলার ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

সাংবাদিক সুরক্ষা আইন: সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আলাদা আইন প্রণয়ন জরুরি।

রাজনৈতিক সদিচ্ছা: ক্ষমতাসীন ও বিরোধী—উভয় পক্ষকেই এই বার্তা দিতে হবে যে সাংবাদিকদের উপর হামলা সহ্য করা হবে না।

জনসচেতনতা: জনগণকে বুঝতে হবে, সাংবাদিকের উপর হামলা মানে নিজের অধিকার খর্ব হওয়া।

পরিশেষে বলবো, সাংবাদিকদের উপর হামলা কখনোই কেবল একটি ব্যক্তিগত ঘটনা নয়—এটি পুরো সমাজ, রাষ্ট্র ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি হুমকি। সত্যকে রক্ষা করা মানে রাষ্ট্রকে রক্ষা করা, আর সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা মানে গণতন্ত্রকে জীবিত রাখা। বাংলাদেশ যদি উন্নত ও সভ্য রাষ্ট্রে পরিণত হতে চায়, তবে এই হামলার সংস্কৃতি এখনই বন্ধ করতে হবে—না হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকারময়।

লেখক- দেলোয়ার হোসেন মাসুদ
যুগ্ম-সম্পাদক
মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ।

Facebook Comments Box

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :
  • প্রকাশের সময় : ০৫:০৩:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫ ২৫৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
    • আপনি কি নেত্রকোণা লাইভ এর নিয়মিত দর্শক..?

      View Results

      Loading ... Loading ...
  • পুরনো ফলাফল
    Logo
    শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
    ফজর3:40 am
    জোহর11:58 am
    আসর4:38 pm
    মাগরিব6:44 pm
    ইশা8:12 pm
    সূর্যোদয় - 5:07 amসূর্যাস্ত - 6:44 pm

    সাংবাদিকদের উপর হামলা: বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কি নিরাপদ?

    প্রকাশের সময় : ০৫:০৩:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

    বিশেষ প্রতিবেদন 

    বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এক সময় ছিল মানুষের আস্থা ও মুক্ত চিন্তার প্রতীক। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যে ধারাবাহিকভাবে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে, তা শুধু পেশাগত ঝুঁকি নয়—এটি দেশের গণতন্ত্র, মুক্ত মত প্রকাশ ও জনগণের জানার অধিকারের উপর সরাসরি আঘাত। ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, আমরা হয়তো এমন এক সময়ের দিকে এগোচ্ছি যেখানে সত্য প্রকাশই হবে সবচেয়ে বড় অপরাধ।

    সাম্প্রতিক কয়েকটি নৃশংস ঘটনা

    ৭ আগস্ট, গাজীপুরের চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ‘দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ’-এর সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন স্থানীয় এক মারধরের ঘটনা ভিডিও করায় দুর্বৃত্তদের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন। তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনা শুধু একটি হত্যা নয়—এটি একটি ভয়ঙ্কর বার্তা: সত্য তুলে ধরা মানেই প্রাণ হারানোর ঝুঁকি।
    একই এলাকায় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে প্রকাশ্য হামলায় আহত করা।

    একই সপ্তাহে, ‘আলরমনি’ সাপ্তাহিকের সম্পাদক হেলাল হোসেন কবির ও তার বৃদ্ধা মা বাড়িতে থাকা অবস্থায় লাঠি ও লোহার রড দিয়ে হামলার শিকার হন। বয়স্ক মায়ের মাথায় আঘাত করা হয়—যা শুধু আইনশৃঙ্খলার অবনতি নয়, মানবতার উপরও চরম আঘাত।

    কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় ‘দৈনিক আজকের সূত্রপাত’-এর সাংবাদিক ফিরোজ আহমেদকে পূর্বের বিবাদের জেরে রড, হাতুড়ি ও ইট দিয়ে আক্রমণ করা হয়। মাথা ও পায়ে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত তিনি এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।

    এই কয়েকটি ঘটনা একই মাসে সংঘটিত—যা প্রমাণ করে, এটি বিচ্ছিন্ন কোনো সমস্যা নয়, বরং একটি ধারাবাহিক প্রবণতা।

    গণমাধ্যমে প্রায়ই সারাদেশে এ ধরনের হামলার ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। সারাদেশের সাংবাদিক সমাজ ফুঁসে উঠেছে। সাংবাদিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে, হতাশায় ভুগছে!

    এই প্রবণতা কোথায় নিয়ে যেতে পারে?

    ১. সাংবাদিকদের মধ্যে ভয় ও আত্মনিয়ন্ত্রণ
    সাংবাদিকরা সত্য প্রকাশের আগে একশোবার ভাববে—ফলে জনগণ সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হবে।

    ২. গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতার অবনতি
    যখন চাপের মুখে সংবাদ পরিবেশন হয়, তখন গণমাধ্যম ধীরে ধীরে ক্ষমতাসীন বা প্রভাবশালী গোষ্ঠীর হাতিয়ার হয়ে পড়ে।

    ৩. গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ক্ষয়
    গণতন্ত্রে ক্ষমতার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্বাধীন গণমাধ্যম অপরিহার্য। সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ হয়ে গেলে দুর্নীতি, অপশাসন ও অবিচার বাড়বে বৈ কমবে না।

    ৪. আন্তর্জাতিক সুনামের অবনতি
    সাংবাদিকদের উপর বারবার হামলা হলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূচকে আরও নিচে নেমে যাবে—যা বিদেশি বিনিয়োগ, কূটনৈতিক সম্পর্ক ও উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

    করণীয় কী?

    দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তি: প্রতিটি হামলার ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

    সাংবাদিক সুরক্ষা আইন: সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আলাদা আইন প্রণয়ন জরুরি।

    রাজনৈতিক সদিচ্ছা: ক্ষমতাসীন ও বিরোধী—উভয় পক্ষকেই এই বার্তা দিতে হবে যে সাংবাদিকদের উপর হামলা সহ্য করা হবে না।

    জনসচেতনতা: জনগণকে বুঝতে হবে, সাংবাদিকের উপর হামলা মানে নিজের অধিকার খর্ব হওয়া।

    পরিশেষে বলবো, সাংবাদিকদের উপর হামলা কখনোই কেবল একটি ব্যক্তিগত ঘটনা নয়—এটি পুরো সমাজ, রাষ্ট্র ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি হুমকি। সত্যকে রক্ষা করা মানে রাষ্ট্রকে রক্ষা করা, আর সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা মানে গণতন্ত্রকে জীবিত রাখা। বাংলাদেশ যদি উন্নত ও সভ্য রাষ্ট্রে পরিণত হতে চায়, তবে এই হামলার সংস্কৃতি এখনই বন্ধ করতে হবে—না হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকারময়।

    লেখক- দেলোয়ার হোসেন মাসুদ
    যুগ্ম-সম্পাদক
    মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ।

    Facebook Comments Box