উন্নয়নের ছোঁয়ায় কমছে দুর্ভোগ, বদলে গেছে পাহাড়ি মানুষের জীবন
হৃদয় আহমেদ কলমাকান্দা: পাহাড়ি মানুষের চলাচলে একসময় ছিল পাহাড় পরিমান কষ্ট। রাস্তার অভাবে আটকে ছিল পাহাড়ি মানুষের জীবনমান। অসুস্থ হলে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে নিতে হতো পায়ে হেঁটে বা কাঁদে করে। তবে সেই চিত্র এখন বদলে গেছে। এখন আর সেই কষ্ট করতে হবে না পাহাড়ে বসবাসরত আদিবাসী ৬০০ পরিবারের। এমনটিই জানিয়েছেন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের কাঠাঁলবাড়ি গ্রামের পাহাড়ি মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কলমাকান্দা সীমান্তের বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ রাস্তার উন্নয়ন কাজ চোখে পড়ার মতো। এরমধ্যে কাঠাঁলবাড়ি পাহাড়ি এলাকার প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো একটি গ্রামীণ রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। এক কিলোমিটার এই রাস্তা সংস্কারে এখন সেখানে মোটরসাইকেল, ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা যাতায়াতের ব্যবস্থা হয়েছে। রাস্তাটি পুনোরায় সংস্কার হওয়ায় খুশি আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন।
এদিকে রাস্তা সংস্কার করতে গিয়ে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ভূইয়ার বিরুদ্ধে। বনবিভাগের বিট অফিসে কর্মরত বনরক্ষী আখতারুল ইসলাম ওই
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ তুলেন। বিষয়টি পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
লেংগুরা ইউপি চেয়ারম্যান ও কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, রাস্তাটি অনেক পুরনো। একসময় পাহাড়ের মানুষ যাতায়াতের কষ্ট করতো। তাই রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। পাহাড় কাটার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে কোন পাহাড় কাটা হয়নি। পাহাড় বয়ে মেনে আসা বৃষ্টির পানি যেন রাস্তার ওপর না আসে সেজন্য পাহাড় ও রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেন করা হয়েছে। তাই পাহাড় কাটা হয়েছে, এমনটাই দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই রাস্তাটি সংস্কার করতে এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত পত্র আমাকে দেয়। চলাচলে রাস্তাটি অনুপযোগী হওয়ায় বরাদ্দ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। রাস্তাটি সংস্কার হওয়ায় পর্যটকদের আসা যাওয়া ও স্থানীয় আদিবাসী মানুষের যাতায়াত সহজ হয়েছে।
কাঠাঁলবাড়ি গ্রামের আদিবাসী বৃদ্ধ সুবেন মানখিন বলেন, এটি অনেক পুরনো রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের উপযোগী ছিল না। বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাঁদা হতো। আমাদের দাবি ছিল রাস্তাটি- যেন হয়।
এ বিষয়ে জানতে বনবিভাগের বিট অফিসে কর্মরত বনরক্ষী আখতারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো বক্তব্য দেননি।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, “এই রাস্তা পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও পর্যটকদের যাতায়াতের একমাত্র পথ। পুরোনো রাস্তাটিকে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোনো পাহাড় কাটা হয়নি।”