দুর্ঘটনা

হঠাৎ করে একটা তুহান (ঝড়) আইয়া আমার ঘরটারে ভাইঙ্গা দিয়া গেল

  MD KAYEAS AHMED ১৬ জুন ২০২৩ , সময় : ৩:১৯ মিনিট অনলাইন সংস্করণ

মদন(নেত্রকোনা) প্রতিনিধি:

“হঠাৎ করে একটা তুহান(ঝড়) আইয়া আমার ঘরডারে ভাইঙ্গা দিয়া গেল। তুহানের মধ্যে আশপাশের মানুষ আইয়া আমরারে উদ্ধার করল। চেয়ারম্যান সাব ও ইউনো স্যার আইসা আমরার ঘরডার ছবি তুইল্লা নিয়ে গেল।




তারা কইছিল আমরার ঘটডারে নতুন কইরা বান্দার দাইল কিছু সহযোগিতা করব কিন্তু এহন একমাস হইয়া গেল আমরা ১০ কেজি চাল ছাড়া এহনো কিছু পাইলাম না। আমার পাঁচটা- ছয়টা ছেলে মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করতেছি। এই তুহানের দিনের মধ্যে আমরা বাড়িতে না থাকতে পেরে এহন অন্যের বাড়ি থাকি।




আমরা হুনছি তুফানে যারার ঘর ভাঙছে তারারে নাকি সরকার থেকে টিন দিতাছে ও টেহা ( টাকা) দিতাছে কিন্তু আমরা তো কিছুই পাইলাম না এহনো। কেউ যদি আমরারে একটু সহযোগিতা করতো তাইলে স্বামী সন্তানগুলো রে লইয়া কোন রকমে নিজের বিডাত থাকতে পারতাম।




” এভাবে ঝড়ে ভাঙ্গা নিজ বিটাতে বসে কান্না জড়িত কন্ঠে কষ্টের কাহিনী বর্ণনা করছিলেন নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের কদমশ্রী( নোওধার) গ্রামের ভূমিহীন কৃষক নুরুল ইসলাম ফকিরের স্ত্রী রাবিয়া আক্তার।

শুক্রবার (১৬ই জুন) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝড়ে ভাঙ্গা নিজ বিটাতে বসে কান্না করছিলেন রাবিয়া আক্তার আর সবার কাছে স্বামী সন্তান নিয়ে নিজ বিটা তে থাকার জন্য সহযোগিতা চাচ্ছিলেন। এ সময় সরকারিভাবে কোন ধরনের সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরার ঘর তৈরি করার জন্য চেয়ারম্যান সাব বলছে টিন দিব ও টেহা দিব কিন্তু এহনো কিছুই দেয় নাই আমরারে।

তাই নিজের ঘরে থাকতে না পাইরা এখন অন্যের বাড়িতে থাহি।

এ সময় রাবিয়া আক্তারের ভাই আলী আহমদ বলেন, আমার বোন গরিব মানুষ তার স্বামীর কোন জমি নেই। আমার বাবা-মা তাদের থাকার জন্য এই অল্প একটু জায়গা দিয়েছেন। এছাড়া তাদের আর কোন জমি জমা নেই। এখন ঘরটা ভেঙে যাওয়ায় এ বাড়িতে না থাকতে পারার কারণে ঝড়ের দিন পর থেকে আমার বাড়িতে আমি তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি।

এ সময় উপস্থিত আরও কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারাও একই কথা বলেন।




এ বিষয়ে গোবিন্দশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাইদুল ইসলাম খান এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারের কাছে পাঠিয়েছি বরাদ্দ পেল তাকে সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন, হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে মদন উপজেলা অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০০ জনকে অনুদান প্রদান করা হয়েছে। আরো কিছু নামের তালিকা উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বরাদ্দ পেলে তা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে খুব শীঘ্রই।

উল্লেখ্য, গত (২১ শে মে) রবিবার বিকালে হঠাৎ করে আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে মদন উপজেলার অনেক ঘর- বাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এতে প্রায় ১৪৭টি পরিবারের অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং ৩০০টিও অধিক পরিবার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।



Facebook Comments Box

আরও খবর:

Sponsered content